নিয়ত - نِيَّـةٌ

নিয়ত: আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে কোনো কাজের ব্যাপারে অন্তরের প্রতিজ্ঞা অথবা বলা যায়, এটি হলো, কোনো কর্ম করার ক্ষেত্রে আনুগত্য ও আল্লাহর নৈকট্য লাভের প্রতিজ্ঞা করা। তার স্থান হলো অন্তর। নিয়ত দুটি অর্থে ব্যবহার হয়: এক- ইবাদতগুলোর একটিকে অপরটি থেকে আলাদা করা। যেমন, যোহরের সালাতকে আছর থেকে পৃথক করা। দুই- আমলের দ্বারা উদ্দেশ্যকে আলাদা করা।

ভাষান্তরিত: ইংরেজি ফরাসি তার্কিশ উর্দু ইন্দোনেশিয়ান রুশিয়ান পর্তুগীজ বাংলা চাইনিজ ফার্সি তাগালোগ ইন্ডিয়ান মালয়ালাম তেলেগু থাই

প্রশংসা করা। - تَحْمِيدٌ

রুকু থেকে ওঠার পর সোজা হয়ে দাড়ানোর সময় একজন মুসল্লির বলা যে, ربَّنا ولَكَ الحَمْدُ।

ভাষান্তরিত: ইংরেজি ফরাসি স্পানিস তার্কিশ উর্দু ইন্দোনেশিয়ান রুশিয়ান পর্তুগীজ বাংলা চাইনিজ ফার্সি তাগালোগ ইন্ডিয়ান মালয়ালাম তেলেগু থাই

রুকু - ركوع

রুকু হলো, সালাতের কর্ম জাতীয় রুকন। তার রয়েছে দুটি গুণ: 1- পিঠ ঝুকানো। যাতে একজন মানুষ তার দুই হাত দ্বারা দুই হাঁটু ধরতে পারে। 2- দুই হাতকে দুই হাঁটুর ওপর টেক লাগানোর সাথে মাথা ঝুকানো, দুই হাতের আঙ্গুলগুলো খোলা রাখা, দুই হাতকে দুই পার্শ্ব থেকে দূরে রাখা এবং মাথা উঁচু বা নিচু করা ছাড়া পিঠকে বরাবর রাখা। আর এ পদ্ধতিটিই হলো, পরিপূর্ণ পদ্ধতি। আর রুকুর দুই অবস্থা: 1- রুকুর পূর্বে মুসল্লির দাঁড়ানো অবস্থায় থাকা। আর সাধারণভাবে রুকু দ্বারা এটিই উদ্দেশ্য হয়। 2- আর বসা অবস্থা থেকে রুকু করা। আর তা হলো পিঠ এমনভাবে নীচু করা যাতে কপাল দুই হাঁটু বরাবর এসে যায়।

ভাষান্তরিত: ইংরেজি ফরাসি তার্কিশ উর্দু ইন্দোনেশিয়ান রুশিয়ান পর্তুগীজ বাংলা চাইনিজ ফার্সি তাগালোগ ইন্ডিয়ান মালয়ালাম তেলেগু থাই

আল্লাহর প্রতি ঈমান - إيمان بالله

আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা হলো দীনের প্রধান ভিত্তি এবং ঈমানের রুকনসমূহের প্রথম রুকন। এটি মানুষের ওপর সর্ব প্রথম ফরয এবং আকীদার ক্ষেত্রে মহান শিকড়। বাকী সব আকীদা তার শাখা। কারণ, ঈমানের কোনো রুকন, শাখা ও নীতির ওপর ঈমান আনা শুদ্ধ হবে না। কেবল আল্লাহর ওপর সত্যিকার ঈমান আনার পরই তা শুদ্ধ হবে। আল্লাহর ওপর ঈমান কতক বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করে: 1- আল্লাহর পবিত্র সত্তার অস্তিত্বের প্রতি বিশ্বাস ও স্বীকার করা। আর জ্ঞান, বুদ্ধি স্বভাব ও শরিআত তার ওপর প্রমাণ। 2- এ কথা বিশ্বাস করা যে, আল্লাহ হলেন রাব্বুল আলামীন, মালিক, খালেক, রিযিকদাতা, তিনি তার মাখলুকের যাবতীয় কর্মের বিধায়ক ও পরিচালনাকারী। সুতরাং তিনি ছাড়া কোনো খালেক নাই, রিযিকদাতা নেই, পরিচালনাকারী ও মালিক নেই। 3- এ কথা বিশ্বাস করা ও স্বীকার করা যে, আল্লাহই হলেন, একমাত্র সত্যিকার ইলাহ আর ইবাদত, আনুগত্য ও নত হওয়ার একমাত্র উপযুক্ত। আর তিনি ছাড়া সব ইলাহ বাতিল এবং তাদের ইবাদতও বাতিল। 4- এ কথা বিশ্বাস করা ও স্বীকার করা যে, আল্লাহই হলেন সব কামাল, জামাল ও জালালের একমাত্র উপযুক্ত। তিনিই দুর্বলতা ও দোষ থেকে মুক্ত।

ভাষান্তরিত: ইংরেজি ফরাসি স্পানিস তার্কিশ উর্দু ইন্দোনেশিয়ান বসনিয়ান রুশিয়ান পর্তুগীজ বাংলা চাইনিজ ফার্সি তাগালোগ ইন্ডিয়ান মালয়ালাম তেলেগু থাই

আউলিয়া (ওলীগণ)। - أولياء

আউলিয়া: শব্দটি ওলী শব্দের বহুবচন। শরীআতের পরিভাষায় যার মধ্যে দুটি গুণ একত্র হয় তাকে ওলী বলে। আর তা হলো ঈমান ও তাকওয়া, যা ফরযসমূহ ও নফলসমূহ আদায় করার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভকে অর্ন্তভুক্ত করে। সাথে সে আল্লাহর আদেশের ইলম রাখে এবং যা জানে তদুনুযায়ী আমল করে। যার আকীদা পরিস্কার এবং আমল সহীহ সে আল্লাহর ওলী। একজন মানুষের ঈমান ও তাকওয়া অনুযায়ী তার বন্ধুত্ব আল্লাহর জন্য হয়ে থাকে। যেমন ওলী হলো সে আল্লাহ যার যাবতীয় বিষয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করল ও তার সংশোধনের জন্য তার প্রতি বিশেষ যত্ন নিল। কারণ, আল্লাহ সালেহীনদের দায়িত্ব গ্রহণ করে থাকেন। তিনি মুমিনদের মহাব্বাত করেন ও তাদের থেকে প্রতিহত করেন। আল্লাহর ওলীগণ দুই প্রকার: 1- অগ্রগামী নৈকট্যলাভকারী। 2- মধ্যপন্থাবলম্বনকারী ডানপন্থী। নৈকট্য লাভকারী অগ্রগামীগণ হলো, যারা ফরযের পর নফলসমূহ দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করেন। তারা ওয়াজিব, মুস্তাহাব সবই করেন এবং হারাম ও মাকরূহ থেকে বিরত থাকে। আর ডান পন্থী হলো, সেসব নেককার বান্দা যারা ফরয দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করেন। তারা আল্লাহ তাদের ওপর যা ওয়াজিব করেছেন তার ওপর আমল করেন এবং আল্লাহ যা নিষেধ করেছেন তা ছেড়ে দেন। তারা মানদুব বিষয়গুলোর ওপর আমল এবং বৈধ অনর্থক বিষয়গুলো ছেড়ে দিতে নিজেদের কষ্টের মধ্যে ফেলেন না। বান্দার ঈমান ও তাকওয়া অনুযায়ী বন্ধুত্ব ব্যবধান হয়ে থাকে। ফলে প্রত্যেক মুমিনেরই আল্লাহর মুহাব্বত, বন্ধুত্ব ও নৈকট্যের অংশ রয়েছে। কিন্তু এ অংশটুকু দৈহিক ও অন্তরের নেক আমল যার দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা হয় তা অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন হয়। কারণ, যে নিজের ওপর যুলুম করে সে হলো গুনাহগার মুমিন। তার ঈমান ও আমলে সালেহ অনুযায়ী তার রয়েছে আল্লাহর বন্ধুত্ব। আল্লাহর অলীগণ নিষ্পাপ নন এবং তারা গায়েব জানেন না। সৃষ্টি ও রিযিক দানে তাদের কোনো ক্ষমতা নাই। তারা কখনোই মানুষকে তাদের সম্মান করা বা কোনো ধন সম্পদ তাদের জন্য খরচ করার প্রতি আহ্বান করে না। আর যে ব্যক্তি এ সব করে সে আল্লাহর ওলী নন। বরং সে মিথ্যুক, মিথ্যা রচনাকারী এবং শয়তানের বন্ধু। আর বেলায়েত অধ্যায়ে এটি ভুল বুঝ ও প্রচারিত গলদ। আরও কতিপয় ভুল হলো: 1- এ ছাড়াও আরও ভুল হলো, আল্লাহর বন্ধু নবী ও নেককারদের বিষয়ে বাড়াবাড়ি করা, যেমন, আল্লাহর কোন বৈশিষ্ট্যকে নবীদের জন্য সাব্যস্ত করা। যেমন, নেককার লোকদের বিষয়ে বাড়াবাড়ি, তাদের কবরসমূহের ওপর নির্মান করা, তাদের নিষ্পাপ হওয়া দাবী করা ইত্যাদি। 2- অনেক মানুষের বিশ্বাস করা যে, একজন বান্দা যতক্ষণ পর্যন্ত কোন অলৌকিক কর্ম সম্পাদন না করবে ততক্ষণ সে ওলী হতে পারবে না। 3- ওলী হওয়ার দ্বারা কেউ নিষিদ্ধ কর্ম করা ও ওয়াজিবসমূহ ছেড়ে দেওয়ার মর্যদায় উপনীত হয়। এবং এ বিশ্বাস করা যে, ওলীগণ এমন এক পর্যায় পৌঁছে যায় যে পর্যায়ে পৌছলে তাদের থেকে মুকাল্লাফ হওয়ার বিষয়টি আর থাকে না। এটি হলো সু স্পষ্ট গোমরাহী। ওলী হওয়া কখনোই নিষিদ্ধ কর্ম করা এবং ওয়াজিব ছেড়ে দেয়া পর্যন্ত পৌছে দেয় না। 4- কতক মানুষ এ ধারণ পোষণ করে যে, ওলী হওয়া কেবল কতক মানুষের বৈশিষ্ট। কিন্তু বিশুদ্ধ হলো, ওলী হওয়া একটি দীনি মর্যদা। এটি প্রত্যেক মুত্তাকী মুমিনের মধ্যে পাওয়া যেতে পারে। এটি কোন ব্যক্তি, স্থান ও কালের সাথে খাস নয়। 5- ওলীদের ওপর কেউ কেউ আল্লাহর সাথী, আল্লাহর মানুষ প্রয়োগ করে। এ ধরণের নাম করণের ওপর তাদের কাছে কোন প্রমাণ নেই। সূফীগণ ওলীর ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের আকীদা পোষণ করে থাকেন। তাদের কেউ ওলীকে নবীর ওপর প্রাধান্য দেয়। আবার তাদের কেউ ওলীকে সব সিফাতে আল্লাহর বরাবর মনে করে। সে সৃষ্টি করে, রিযিক দেয়, জীবন দেয়, মৃত্যু দেয় এবং জগতকে সে পরিচালনা করে। তাদের নিকট বিলায়াতের বিভিন্ন প্রকার রয়েছে। যেমন, গাওস, আকতাব, আবদাল, নুজাবা। হিরা গুহায় তারা তাদের দপ্তরে প্রত্যেক রাত একত্র হয় এবং তারা তাকদীরের বিষয়ে দেখা শোনা করে। তাদের কেউ কেউ আছে যারা এ ধরনের বিশ্বাস করে না তবে তারা তাদের ও তাদের রবের মাঝে মাধ্যম সাব্যস্থ করে। চাই তা তাদের জীবদ্দশায় হোক বা মৃত্যুর পর হোক। আহলে সুন্নাত ওয়ালা জামাত ইসমত (নিষ্পাপ হওয়া) নবী ছাড়া আর কারো জন্য বিশ্বাস করে না। আর অপরদিকে সূফীগণ ওলী হওয়ার জন্য ইসমতকে শর্ত হিসেবে দেখেন। আবার তাদের কেউ আছে যদি কেউ পদস্খলনে পতিত হয় অথবা ভুলে পতিত হয় তখন তার থেকে বিলায়াতকে সম্পূর্ন না করে দেয়।

ভাষান্তরিত: ইংরেজি ফরাসি স্পানিস তার্কিশ উর্দু ইন্দোনেশিয়ান বসনিয়ান রুশিয়ান পর্তুগীজ বাংলা চাইনিজ ফার্সি তাগালোগ ইন্ডিয়ান মালয়ালাম তেলেগু থাই

শরীআত - الشريعة

শরীআত: যে সব আকায়েদ, আহকাম ইত্যাদি আল্লাহ চালু করেছেন। আর তার রয়েছে সর্বসম্মত উৎস। আর তা হলো কিতাব ও সুন্নাহ এবং ইজমা ও কিয়াস। আর রয়েছে মত বিরোধী উৎস। যেমন, সাহাবীগণের কথা। আর তার রয়েছে প্রসিদ্ধ উদ্দেশ্য।

ভাষান্তরিত: ইংরেজি ফরাসি স্পানিস তার্কিশ উর্দু ইন্দোনেশিয়ান বসনিয়ান রুশিয়ান পর্তুগীজ বাংলা চাইনিজ ফার্সি তাগালোগ ইন্ডিয়ান মালয়ালাম তেলেগু থাই

পবিত্র - تقديس

তাকদীস হলো, মহান আল্লাহ, যিনি এক ও অদ্বিতীয়, যার কোন শরীক নাই তার পরিপূর্ণ মহত্ব ও পূর্ণতার সবোর্চ্চ চুড়া। কারণ, তার জন্য রয়েছে আযমাতের (বড়ত্বের) গুণ এবং জালাল ও কামালের যাবতীয় বৈশিষ্ট্য। তাই তাঁর সব নামই হলো সুন্দর। আর তাঁর সব কর্ম হলো হিকমাহ। আর তার পুরো শরীআত হলো আদল ও রহমত। আর তার বান্দাগণের ওপর তার নিআমত অসংখ্য অগণিত। সুতরাং তিনিই সবোর্চ্চ সম্মান ও পুরোপুরি মহত্বের একক উপযুক্ত সত্ত্বা। তাঁর নামসমূহের মধ্যে একটি নাম কুদ্দুস। আর তা হলো, তিনি তার স্বীয় সত্ত্বা, সিফাত ও নামসমূহে পরিপূর্ণ মহত্বের অধিকারী এবং সব ধরনের দোষত্রুটি ও দুর্বলতা থেকে তিনি মহাপবিত্র। তিনি সেই সত্ত্বা যিনি তাঁর অলীদের অন্তরসমূহকে ইলম, ঈমান ও নেক আমল দ্বারা পবিত্র ও পরিশুদ্ধ করেন। আর আল্লাহ ছাড়া অন্যরা আল্লাহর নিকট তার অবস্থান অনুযায়ী এবং আল্লাহ তার সম্মানের যে প্রথা চালু করেছেন সে অনুযায়ী তিনি সম্মানের অধিকারী হন। যেমন, মহান শরীআত কতক স্থান ও সময়ের সম্মান ও মর্যাদা দান করেছেন। কারণ, তাতে আল্লাহ এমন কতক ইবাদত চালু করেছেন যাতে তিনি খুশি ও সন্তুষ্ট হন। আর যে সব সম্মান এর বাহিরে তা হলো নিষিদ্ধ সম্মান যার অনুমতি আল্লাহ দেননি।

ভাষান্তরিত: ইংরেজি ফরাসি স্পানিস তার্কিশ উর্দু ইন্দোনেশিয়ান রুশিয়ান পর্তুগীজ বাংলা চাইনিজ ফার্সি তাগালোগ ইন্ডিয়ান মালয়ালাম তেলেগু থাই

তাকওয়া - تقوى

তাকওয়া: এটি উত্তম চরিত্রসমূহ অন্তর্ভুক্তকারী শব্দ। আর তার মূল হলো, আল্লাহর আদেশ ও নিষেধের আনুগত্য করা দ্বারা আল্লাহর আযাব থেকে আত্মরক্ষা করা। এটি আত্মার এমন একটি গুণ, যা একজন মানুষকে আল্লাহর আদেশসমূহ পালন করা ও তিনি যা থেকে নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাকতে উদ্ভুদ্ধ করে। অপর অর্থে, নিষিদ্ধ কর্মগুলো করা বা ওয়াজিবগুলো ছেড়ে দেয়াতে যে শাস্তির উপযুক্ত হয় তা থেকে আত্মাকে হিফাযত করা এবং যে সব মুস্তাহাব, নফল কর্মগুলো পালন এবং মাকরূহ ও সংশয়যুক্ত কর্মগুলো থেকে বিরত থাকাতে মর্যদা বৃদ্ধি পায় সে সব গুণে গুণান্বিত হওয়া। আল্লাহ তাআলা পূর্ববর্তী ও পরবর্তীদের তাকওয়া অবলম্বনের আদেশ দিয়েছেন, আর ঈমান ও তাকওয়াকেই তার বন্ধুত্বের কারণ বানিয়েছেন এবং তা অবলম্বনকারীদের জন্য বিশাল সাওয়াব রেখেছেন।

ভাষান্তরিত: ইংরেজি ফরাসি স্পানিস তার্কিশ উর্দু ইন্দোনেশিয়ান রুশিয়ান পর্তুগীজ বাংলা চাইনিজ ফার্সি তাগালোগ ইন্ডিয়ান মালয়ালাম তেলেগু থাই

তাওহীদ - توحيد

তাওহীদ হলো, সবচেয়ে বড় বিষয় আল্লাহ তাআলা যা তাঁর বান্দাদের ওপর ফরয। এটি হলো বান্দার ওপর আল্লাহর হক। আর এটি হলো শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সব নবী ও রাসূলগণের দাওয়াতের ভিত্তি। আর তাওহীদ হলো, এ কথা বিশ্বাস করা যে, আল্লাহ তাআলা স্বীয় সৃষ্টি, রাজত্ব ও পরিচালনায় একক। তিনিই ইবাদাতের একমাত্র হকদার। তিনি একক তার কোনো শরীক নেই। ইবাদত থেকে কোন কিছুই গাইরুল্লাহকে সোপর্দ করা যাবে না। আর তার জন্য রয়েছে নামসমূহ ও গুণসমূহ। তাতে তার কোন দৃষ্টান্ত ও সাদৃশ নাই। এই তাওহীদ তিন প্রকার: 1- তাওহীদুল উলুহিয়্যাহ। 2- তাওহীদুর রবুবিয়্যাহ। 3- তাওহীদুল আসমা ওয়াস সিফাত। সাব্যস্ত করা ও অসাব্যস্ত করা ছাড়া কোনো মানুষের তাওহীদ পরিপূর্ণ হয় না। প্রথম: সাব্যস্ত করা। অর্থাৎ উবুদিয়্যাত, রুবুবিয়্যাত এবং নাম ও সিফাতসমূহের যাবতীয় বৈশিষ্ট আল্লাহর জন্য সাব্যস্ত করা। দুই: অসাব্যস্ত করা, উবুদিয়্যাত, রুবুবিয়্যাত এবং নাম ও সিফাতসমূহের যেসব বৈশিষ্ট আল্লাহর জন্যে খাস তা গাইরুল্লাহর জন্যে অসাব্যস্ত করা।

ভাষান্তরিত: ইংরেজি ফরাসি স্পানিস তার্কিশ উর্দু ইন্দোনেশিয়ান রুশিয়ান পর্তুগীজ বাংলা চাইনিজ ফার্সি তাগালোগ ইন্ডিয়ান মালয়ালাম তেলেগু থাই

তাওহীদুর রুববিয়্যাহ - توحيد الربوبية

তাওহীদুর রুববিয়্যাহ: আল্লাহর অস্তিত্বের প্রতি ঈমান আনা এবং স্বীয় কর্মসমূহে তাঁর একত্ববাদে বিশ্বাস করা। আর অকাট্যভাবে এ কথা বিশ্বাস ও স্বীকার করা যে, আল্লাহ সবকিছুর রব ও মালিক, তিনি একক। তিনি প্রতিটি বস্তুর স্রষ্টা ও রিযিকদাতা। আর তিনিই হায়াতদাকারী ও মৃত্যুদানকারী। তিনি উপকারকারী ও ক্ষতিকারী। বিপদের সময় দুআ কবুলে তিনি একক। তাঁর জন্যই রয়েছে যাবতীয় বিষয়। তার হাতেই যাবতীয় কল্যাণ। পরিকল্পনা ও পরিচালনার ক্ষেত্রে সবকিছু তার দিকে প্রত্যাবর্তন করে। এতে তার কোনো শরীক নেই।

ভাষান্তরিত: ইংরেজি ফরাসি স্পানিস তার্কিশ উর্দু ইন্দোনেশিয়ান রুশিয়ান পর্তুগীজ বাংলা চাইনিজ ফার্সি তাগালোগ ইন্ডিয়ান মালয়ালাম তেলেগু থাই

আনুগত্য করা - طاعَةٌ

আনুগত্যতা হলো দীনের ভিত্তি এবং ইবাদাতের রুকন। আর তা হলো বাস্তবায়ন করার নিয়তে মানুষকে যা আদেশ করা হয়েছে তা পালন করা এবং যা থেকে তাকে না করা হয়েছে তা ছেড়ে দেয়া। আদিষ্ট বা নিষেধকৃত বিষয়টি কথা বা আমল বা বিশ্বাস যাই হোক। এটি দুই প্রকার: এক- স্রষ্টার আনুগত্য করা, আর সেটি হলো আল্লাহ ও তার রাসূল যা আদেশ করেছেন তা পালন করা এবং তারা যা নিষেধ করেছেন তা ছেড়ে দেয়া। দুই- মাখলুকের আনুগত্য করা। এটি আবার দুই প্রকার: 1- প্রসংশিত আনুগত্য। যেমন, পাপের বাইরে দায়িত্বশীল ও মাতাপিতার আনুগত্য করা। 2- মন্দ ও নিন্দনীয় আনুগত্য করা। আর তা হলো পাপ কাজে মাখলুকের আনুগত্য করা। এ ধরণের আনুগত্যের মধ্যে কতক আছে শির্ক। যেমন, হারামকে হালাল করা বা হালালকে হারাম করার ব্যাপারে বা মুর্তি পুজা বিষয়ে মাখলুকের আনুগত্য করা। আবার কোনো কোনো আনুগত্য ফাসেকী। যেমন, মদ পানে কোনো মাখলুকের আনুগত্য করা ইত্যাদি।

ভাষান্তরিত: ইংরেজি ফরাসি তার্কিশ উর্দু ইন্দোনেশিয়ান রুশিয়ান পর্তুগীজ বাংলা চাইনিজ ফার্সি তাগালোগ ইন্ডিয়ান মালয়ালাম তেলেগু থাই

তাওহীদুল উলুহিয়্যাহ - توحيد الألوهية

আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আলেমগণ বিশ্বাস করেন যে, তাওহীদ তিন প্রকার : উলুহিয়্যাত, রুবুবিয়্যাত ও তাওহীদুল আসমা ও সিফাত কুরআন ও হাদীস থেকে অনুসন্ধান করে নেওয়া হয়েছে। এটি পূর্ববর্তী সালাফ আলেমগণের নিকট স্পষ্ট ছিল। এটি কোনো নতুন আবিষ্কৃত ভাগ নয়। এ তিনটি প্রকারের পরস্পরের মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে। এর কতক কতককে পুর্ণ করে। ফলে এর কতক অংশকে বাদ দিয়ে কতককে গ্রহণ করার কোন সুযোগ নেই। সুতরাং এ প্রকার সমূহের মাঝে সম্পর্ক তালাযুম, তাযাম্মুন ও শুমলের সম্পর্ক। সুতরাং বলা যায় যে, তাওহীদে রুবুবিয়্যাহ তাওহীদুল আসমা ও সিফাতকে আবশ্যক করে। কারণ, যখন কোনো বান্দা এ কথা বিশ্বাস করে যে, আল্লাহ তার রব, সৃষ্টিতে, নাম ও সিফাতসমূহে তার কোন শরীক নেই, তখন তার ওপর এ কথা বর্তায় যে, সে আল্লাহ ছাড়া আর কারো ইবাদত করবে না, আর অপরদিকে তাওহীদুল উলুহিয়্যাহ তাওহীদে রুবুবিয়্যাহ ও তাওহীদুল আসম ও সিফাতকে অর্ন্তভুক্ত করে। অতএব তাওহীদে উলুহিয়্যাহতে বিশ্বাসী অবশ্যই এ কথা বিশ্বাস করে যে, আল্লাহ তার রব, স্রষ্টা, আর তার জন্য রয়েছে কামাল, জামাল ও জালালের যাবতীয় গুণসমূহ। মনে রাখতে হবে, তাওহীদুল উলুহিয়্যাহ হলো দীনের প্রধান এবং নবী ও রাসূলগণের দাওয়াতের ভিত্তি। এটিকে তাওহীদুল ইলাহিয়্যাহ, তাওহীদুল ইবাদাহ, তাওহীদুল কসদ ওয়াততলব, তাওহীদুল ইরাদী আত-তালাবী বলেও নাম করণ করা হয়। আল্লাহর দিকে সম্বোধন করা অনুযায়ী এটিকে তাওহীদুল উলুহিয়্যাহ এবং ইবাদতকারীর দিকে সম্বোধন হিসেবে এর নাম করা হয় তাওহীদুল ইবাদাহ ও তাওহীদুল কাসদ ও তলব। আর তাওহীদুল উলুহিয়্যাহ: আর এটি হলো বান্দার এমনসব কর্ম আল্লাহকে এককভাবে সোপর্দ করা, যার দ্বারা তিনি তাদেরকে বান্দা বানিয়েছেন এবং যা তাদের জন্যে অনুমোদন করেছেন। যেমন, দুআ, জবেহ, মান্নত, সাহায্য চাওয়া ইত্যাদি ইবাদাতের প্রকারসমূহ। কারণ, তিনি একাই তার উপযুক্ত। তাওহিদুল উলুহিয়্যার ভিত্তি হচ্ছে, সব আমল অন্য কারো জন্য না করে কেবল আল্লাহর জন্য করা। চাই এ সব আমল আত্মার আমল হোক বা অঙ্গ প্রত্যঙ্গের আমল হোক। আর এ প্রকারের তাওহীদই হলো শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সব নবীদের দাওয়াতের মুল আলোচ্য বিষয়।

ভাষান্তরিত: ইংরেজি ফরাসি তার্কিশ উর্দু ইন্দোনেশিয়ান রুশিয়ান পর্তুগীজ বাংলা চাইনিজ ফার্সি তাগালোগ ইন্ডিয়ান মালয়ালাম তেলেগু থাই

শাহাদাতান - الشَهادَتانِ

শাদাতান হলো, কোনো মানুষের বলা যে, “আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল। প্রথম সাক্ষ্যদানের অর্থ হলো, একক আল্লাহর জন্য যাবতীয় ইবাদত করা। তিনি ছাড়া অন্য সবকিছু থেকে ইবদাতকে না করা। এই সাক্ষ্য সাক্ষ্যদাতাকে কোনো উপকার করবেন না যতক্ষণ না তার ভেতর দু’টি জিনিস পাওয়া যাবে: 1- লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বিশ্বাস, ইলম, ইয়াকীন, সত্যারোপ, মুহাব্বত, ইখলাস ও আনুগত্যের সাথে বলা। 2- আল্লাহ ব্যতীত আর যে সবকিছুর ইবাদত করা হয়, তা প্রত্যাখ্যান করা। অতএব যে ব্যক্তি এ শাহাদাত মুখে বলল এবং আল্লাহ ছাড়া যে সবের ইবাদত করা হয় তার সাথে কুফরী করল না। এ কথা তার কোনো উপকার করবে না। আর দ্বিতীয় সাক্ষ্য হলো, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল। এর অর্থ হলো, যে সব বিষয়ে তিনি নির্দেশ দেন তা মানা। যে সংবাদ দেন তা বিশ্বাস করা, যা নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাকা। তিনি যা শরীআত হিসেবে দান করেছেন তা ছাড়া অন্যভাবে আল্লাহর ইবাদত না করা। আর এ কথা জানা ও বিশ্বাস করা যে, মুহাম্মাদ সমগ্র মানবজাতির নিকট প্রেরিত রাসূল। তিনি এমন এক বান্দা যার ইবাদত করা যায় না। আর এমন এক রাসূল যাকে অস্বীকার করা যায় না। বরং তার অনুসরণ ও অনুকরণ করতে হবে। যে তার আনুগত্য করল জান্নাতে প্রবেশ করবে আর যে তার নাফরমানি করল জাহান্নামে প্রবেশ করবে।

ভাষান্তরিত: ইংরেজি ফরাসি তার্কিশ উর্দু ইন্দোনেশিয়ান রুশিয়ান পর্তুগীজ বাংলা চাইনিজ ফার্সি তাগালোগ ইন্ডিয়ান মালয়ালাম তেলেগু থাই

স্বভাব - فطرة

আল্লাহ মাখলুককে ইসলাম ও তাওহীদের ওপর সৃষ্টি করেছেন। ফলে প্রতিটি মানুষের স্বভাবের দাবি হলো ইসলাম কবুল করা. ইসলামকে জানা ও মহব্বত করা। ফিতরাত বা স্বভাব স্রষ্টাকে স্বীকার করতে, মুহাব্বত করতে এবং কেবল তার জন্য যাবতীয় ইবাদত সম্পাদন করতে বাধ্য করে। স্বভাবের দাবি ও চাহিদসমূহ স্বভাবের পূর্ণতা অনুযায়ী একটির পর একটি লাভ হয় যখন তা বাধা হতে নিরাপদ হয়। আর যখন ফিতরাত নিরাপদ না হয়, তা শয়তান, প্রবৃত্তি ও বিভিন্ন গোমরাহীর দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার কারণে বিকৃত হয়ে পড়ে। ফিতরাত সাধারণত আল্লাহর নিকট থেকে নাযিলকৃত শরীআত দ্বারা পরিপূর্ণ। কারণ, ফিতরাত বিষয়গুলো সংক্ষেপে জানে আর শরীআত তার ব্যাখ্যা প্রদান করে। সুতরাং শরীআতের বিস্তারিত জানার ক্ষেত্রে স্বভাব বা ফিতরাত স্বয়ং সম্পন্ন নয়। এ কারণে আল্লাহ ফিতরাতকে পরিপূর্ণ করার জন্যে তাদের নিকট রাসূলগণ প্রেরণ করেন।

ভাষান্তরিত: ইংরেজি ফরাসি তার্কিশ উর্দু ইন্দোনেশিয়ান রুশিয়ান পর্তুগীজ বাংলা চাইনিজ ফার্সি তাগালোগ ইন্ডিয়ান মালয়ালাম তেলেগু থাই

খুলাফায়ে রাশেদীন - الخُلفاءُ الرّاشِدُونَ

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পর এ উম্মাতের সবচেয়ে উত্তম ব্যক্তি হলেন, চার খলিফা যাদের অনুসরণ করা এবং তাদের আদর্শ মজবুত করে ধরার জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নির্দেশ দিয়েছেন। তারা হলেন, আবূ বকর সিদ্দীক, আবূ হাফস উমার ইবনুল খাত্তাব, যুন নুরাইন উসমান ইবন আফফান ও আবূল হাসান আলী ইবনে আবূ তালেব রাদিয়াল্লাহু আনহুম, যারা ইসলামের শুরুতেই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ছিলেন। অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মৃত্যুর পর দীনকে ঈলম, আমল ও দাওয়াত সর্বদিক থেকে কায়েম করার লক্ষ্যে এবং মুসলিমদের কল্যাণ ও দুনিয়া ও আখিরাতে তাদের যাবতীয় কর্ম আঞ্জাম দেওয়ার জন্য খিলাফত ও ইমামতের দায়িত্বে অধিষ্ঠিত হন। তাদের খিলাফত ত্রিশ বছর স্থায়ী হয়। দুই বছর তিন মাস হলো আবূ বকরের খিলাফতের সময়। আর উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুর খিলাফত সাড়ে দশ বছর, উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহুর খিলাফত বারো বছর এবং আলী রাদিয়ালল্লাহু আনহুর খিলাফত চার বছর নয় মাস। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আকীদা হলো তাদের মর্যাদার ধারাবাহিকতা তাদের খিলাফতের ধারাবাহিকতা অনুযায়ী।

ভাষান্তরিত: ইংরেজি ফরাসি স্পানিস তার্কিশ উর্দু ইন্দোনেশিয়ান রুশিয়ান পর্তুগীজ বাংলা চাইনিজ ফার্সি তাগালোগ ইন্ডিয়ান মালয়ালাম তেলেগু থাই

আল-ইসলাম - الإسلام

ইসলাম হলো সত্য দীন। এটি ছাড়া অন্য কোনো দীনকে আল্লাহ কারো থেকে কবুল করবেন না। এটি হলো বিশেষ অর্থ। ইসলাম তার সামগ্রিক অর্থে দুই ভাগে বিভক্ত হয়: প্রথম: ইচ্ছায় ও অনিচ্ছায় আল্লাহর কাওনী ও কাদরী বিষেয়র আনুগত্য করা ও মেনে নেওয়া। এ ধরনের মেনে নেওয়াতে কারো কোনো স্বাধীনতা নাই এবং তাতে কোনো সাওয়াবও নাই। দুই: আল্লাহর শরীআতের আনুগত্য করা ও মেনে নেওয়া। এটি হলো সে ইসলাম যার ওপর মানুষকে প্রসংশা করা হয় এবং সাওয়াব দেওয়া হয়ে থাকে। এটিকেও আম ও খাস দুই ভাগে ভাগ করা হয়: 1- আম-ব্যাপক: এটি হলো সে দীন যা নিয়ে নূহ আলাইহিস সালাম থেকে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত সব নবীর আগমন ঘটেছে। আর তা হলো, এক আল্লাহর ইবাদত করা, তার কোনো শরীক নেই এবং তার শরীআতকে প্রতিষ্ঠা করা। 2- খাস বা বিশেষ: আর তা হলো, সে শরীআত যা নিয়ে আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসেছেন। তার রয়েছে দুটি ব্যবহার: এক: প্রকাশ্য কথা ও কর্ম। আর তা হলো পাঁচ রুকন ও তার আনুসাঙ্গিক বিষয়। দুই: এটি বাহ্যিক আমাল ও বাতেনী বিশ্বাসকে সামিল করে। যেমন, ঈমানের ছয়টি রুকন ও তার আনুসাঙ্গিক বিষয়।

ভাষান্তরিত: ইংরেজি ফরাসি স্পানিস তার্কিশ উর্দু ইন্দোনেশিয়ান বসনিয়ান রুশিয়ান পর্তুগীজ বাংলা চাইনিজ ফার্সি তাগালোগ ইন্ডিয়ান মালয়ালাম তেলেগু থাই

ছোট শির্ক - شرك أصغر

ছোট শির্ক হলো সে সব গুনাহ যেগুলো শরীআত প্রণেতা শির্ক বলে নামকরণ করেছেন, তবে তার সাথে গাইরুল্লাহর ইবাদত- ইচ্ছা, কথা ও কর্ম করার স্তরে পৌঁছেনি। অথবা প্রত্যেক মৌখিক আমল বা কর্ম যার ওপর শরীআত শির্ক প্রয়োগ করেছেন; কিন্তু তা একজন মানুষকে ইসলাম থেকে বের করে দেয় না। যেমন, গাইরুল্লাহর নামে শপথ করা, সামান্য রিয়া ইত্যাদি। ছোট শির্ক দুই প্রকার: 1- প্রকাশ্য শির্ক: আর এটি হলো যে শির্ক মুখে ও আমলে প্রকাশ পায়। সুতরাং মৌখিক শির্ক হলো, গাইরুল্লাহর নামে সপথ করা এবং এ কথা বলা যে, আল্লাহ যা চেয়েছে এবং তুমি যা চেয়েছো। কখনো কখনো এটি বড় শির্ক পর্যন্ত পৌছে যায় কথকের নিয়ত ও ইচ্ছার কারণে। কারণ, গাইরুল্রাহর তাযীমের ইচ্ছা করা আল্লাহকে তাযীম করার মতো। ফলে সে শির্কে আকবার করল। আর কাজের শির্ক হলো, মুসীবত দূর করা বা তা তুলে দেয়ার জন্য তাবীয পরিধান করা তাগা লাগানো এবং বদ নজর থেকে বাঁচার জন্য তাবীয ঝুলানো। তবে যদি কেউ এ বিশ্বাস করে যে, এগুলো নিজেই মুসীবত দূর করতে সক্ষম তাহলে এটি শির্কে আকবর। 2- গোপন শির্ক। এটি হলো নিয়ত, ইচ্ছা ও উদ্দেশ্যে শির্ক। যেমন, লোকিকতা ও সুখ্যাতি। যেমন, যেসব আমল দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা হয় এমন আমল যেমন সালাত বা তিলাওয়াত খুব সুন্দর করে করল, যাতে সে প্রসংশিত হয় এবং তাকে মানুষ ভালো আখ্যায়িত করে।

ভাষান্তরিত: ইংরেজি ফরাসি স্পানিস তার্কিশ উর্দু ইন্দোনেশিয়ান রুশিয়ান পর্তুগীজ বাংলা চাইনিজ ফার্সি তাগালোগ ইন্ডিয়ান মালয়ালাম তেলেগু থাই

আল্লাহর আয়াতসমূহ। - آيات الله

আল্লাহর আয়াতসমূহ: তা হলো এমন সব দলীল প্রমাণ ও নিদর্শন যা তার প্রতি পথ পদর্শন করে এবং কেবল তার ইবাদত করার দিকে ধাবিত করে। আল্লাহর আয়াতসমূহ দুই প্রকার: 1- কাওনী আয়াতসমূহ: আর তা হলো ছোট বড় সব সৃষ্টি যেমন, আসমানসমূহ, যমীন, নক্ষত্ররাজি, পাহাড়সমূহ, গাছপালা পশুপাখি ইত্যাদি। এ সবের সৃষ্টি, পরিচালনার মধ্যে চিন্তা করা এবং এদের বিস্তারিত রহস্য সম্পর্কে ফিকির করা আল্লাহর তাওহীদের দিকে নিয়ে যায়। 2- শরয়ী আয়াতসমূহ: আর তা হলো রাসূলগণ যে সব ওহী নিয়ে এসেছেন। যেমন কুরআনুল করীম ও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাত। এখানে কুরআনের আয়াতসমূহের ওপর আয়াত শব্দের একটি ব্যবহার রয়েছে।

ভাষান্তরিত: ইংরেজি ফরাসি স্পানিস তার্কিশ উর্দু ইন্দোনেশিয়ান বসনিয়ান রুশিয়ান পর্তুগীজ বাংলা চাইনিজ ফার্সি তাগালোগ ইন্ডিয়ান মালয়ালাম তেলেগু থাই

ইবাদত - عبادة

ইবাদত হলো পরিপূর্ণ বিনয় ও নমনীয়তা। আর আল্লাহর ইবাদত তাঁর তাওহীদকে শামিল করে, যা মাখলুক সৃষ্টি করার একমাত্র লক্ষ্য। এ কারণেই ইবাদাতের কিছু অংশ গাইরুল্লাহর জন্য করা শির্ক। ইবাদাতের দুটি প্রয়োগ রয়েছে: প্রথম- কাউনি (পার্থিব) সাধারণ ইবাদত। আর এটি হলো বল প্রয়োগ ও রাজত্বের ইবাদত। এটি আসমান ও যমীনের সব অধিবাসী মুমিন ও কাফির সবাইকে শামিল করে। ফলে সবই আল্লাহর গোলাম। অর্থাৎ তারা সবাই তাঁর কাওনী নির্দেশের অনুগত্যকারী। যখন তিনি চান তাদের জীবন দান করেন আর যখন চান তিনি তাদের মৃত্যু দান করেন। আর যখন চান তিনি তার হিকমত অনুযায়ী ইচ্ছামত তাদের মাঝে কর্তৃত্ব করেন। এর থেকে বের হওয়ার তাদের কোনো সুযোগ নাই। এ ধরনের ইবাদতে কোনো সাওয়াব নাই এবং কোনো প্রসংশার অধিকারীও হবে না। দ্বিতীয়- শরয়ী বিশেষ ইবাদত। এটি হলো, আনুগত্য, বিনয় ও ইচ্ছাধীন মুহাব্বাতের ইবাদত। এ ইবাদতের ওপর মানুষের প্রসংশা করা হয়। এটি আল্লাহ যাকে তাওফীক দেন তার সঙ্গে খাস। এটি কবুল হওয়ার শর্তের মধ্যে রয়েছে ঈমান, এখলাস ও অনুসরণ। বিশেষ ইবাদত আনুগত্যের সব প্রকারকে অন্তর্ভুক্ত করে। এর স্তর হলো চারটি: 1- অন্তরের কথা, আর তা হলো, আল্লাহ যা সংবাদ দিয়েছেন তা বিশ্বাস করা। 2- মুখের কথা, আর তা হলো মুখে তার সংবাদ দেয়া, তা উচ্চারণ করা ও তার দিকে আহ্বান করা। 3- অন্তরের আমল, যেমন, তাকে মহাব্বাত করা ও তার ওপর ভরসা করা। 4- আর হলো অঙ্গের আমল, যেমন সালাত ইত্যাদি। আর ইবাদতের রুকন হলো তিনটি, মুহাব্বাত, ভয় ও আশা।

ভাষান্তরিত: ইংরেজি ফরাসি স্পানিস তার্কিশ উর্দু ইন্দোনেশিয়ান রুশিয়ান পর্তুগীজ বাংলা চাইনিজ ফার্সি তাগালোগ ইন্ডিয়ান মালয়ালাম তেলেগু থাই

সরল পথ - الصراط المستقيم

সীরাতে মুস্তাকীম: আর তা হলো যা দিয়ে আল্লাহ তার রাসূলকে প্রেরণ করেছেন। এটি বাতেনী বিষয়—বিশ্বাস ও ইচ্ছাসমূহকে শামিল করে এবং প্রকাশ্য বিষয়—কথা ও কর্মগুলো শামিল করে। এটিই হলো ইবলিসের লক্ষ্য আদম সন্তানকে সিরাতে মুস্তাকীম থেকে বিরত রাখার জন্য তার ওপর উঠে বসে। সিরাতে মুস্তাকীম হলো সুস্পষ্ট রাস্তা যাতে কোনো বক্রতা নাই ও বিকৃতি নাই। আর তার প্রয়োগের মধ্যে রয়েছে— আল্লাহ ও তার রাসূলের আনুগত্য করা এবং সুন্নাত ও জামাতের আনুগত্য করা এবং আল্লাহর গোলামীর পথ ইত্যাদিকে অবলম্বন করা।

ভাষান্তরিত: ইংরেজি ফরাসি স্পানিস তার্কিশ উর্দু ইন্দোনেশিয়ান বসনিয়ান রুশিয়ান পর্তুগীজ বাংলা চাইনিজ ফার্সি তাগালোগ ইন্ডিয়ান মালয়ালাম তেলেগু থাই

তাসবীহ - تَسْبِيحٌ

তাসবীহ আল্লাহর প্রতি ঈমানের সাক্ষ্যসমূহের অন্তর্ভুক্ত এবং তার তাওহীদের নীতিসমূহের একটি নীতি। এ ছাড়াও এটি ইসলামী আকীদার সৌন্দর্য্যের দলীল। আর তার অর্থ হলা আল্লাহর তাজীম ও পবিত্রতা বর্ণনা করা এবং মুশরিক ও মুলহিদরা যেসব দোষত্রুটি তাঁর সঙ্গে সম্পৃক্ত করেছে তা থেকে তাকে পবিত্র ও মুক্ত করা। যেমন, শরীক সাব্যস্ত করা, সন্তান সাব্যস্ত করা, সঙ্গীনি ইত্যাদি সাব্যস্ত করা। আর এটি হলো অন্তরসমূহ ও চিন্তা চেতনাকে আল্লাহর প্রতি কোন দূর্বলতার ধারণা পোষণ অথবা তার প্রতি কোন খারাপ সম্বোধন করা থেকে দূরে রাখা। আর এর দাবি হলো পূর্ণতার সিফাতসমূহকে আল্লাহর সঙ্গে সাব্যস্ত করা। আল্লাহর সুন্দর নামসমূহের মধ্যে রয়েছে সাব্বুহু বা সুব্বুহু। আর এর অর্থ হলো, সে সত্বা যাকে সব ধরবের দোষ ও ত্রুটি থেকে আসমানসমূহ ও যমীনের অধিবাসীরা পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন করে। তাসবীহ কখনো মুখে সুবহানাল্লাহ বলার দ্বারা হয়ে থাকে। আবার কখনো অঙ্গের দ্বারা হয়ে থাকে। আর তা হলো, আর তা হলো আল্লাহকে ছাড়া অন্যদের বাদ দিয়ে একক আল্লাহর ইবাদত করার দ্বারা। আর অন্তর দ্বারাও হয়ে থাকে। অন্তরে আল্লাহকে পবিত্র জানা এবং তার থেকে সব ধরনের ত্রুটি না করা। আর তার নাম, সিফাত ও সত্তাতে পূর্ণতার বিশ্বাস করা। তাসবীহ পাঁচ প্রকার: 1- আল্লাহর জাতে মুকাদ্দাসার তাসবীহ। 2- আল্লাহর জন্য ফিরিশতাদের তাসবীহ। 3- আল্লাহর জন্যে নবী ও তাদের অনুসারীদের মত নেককার মানুষের তাসবীহ। 4- আল্লাহর জন্য সমগ্র জগতের তাসবীহ। 5- আল্লাহর জন্যে জান্নাতে জান্নাতীদের তাসবীহ।

ভাষান্তরিত: ইংরেজি ফরাসি তার্কিশ উর্দু ইন্দোনেশিয়ান রুশিয়ান পর্তুগীজ বাংলা চাইনিজ ফার্সি তাগালোগ ইন্ডিয়ান মালয়ালাম তেলেগু থাই

আল-কুরআন - القرآن

কুরআন: এটি আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর নাযিলকৃত। এটি আল্লাহর কালাম, মাখলুক নয়। আর এটি ইসলামের আকীদা, ইবাদত, আহকাম ও আদাবসমূহের কিতাব। কুরআনের অনেকগুলো বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যেমন, সম্মান, ইয্যত, মহত্ব ইত্যাদি। আর কয়েকটি কারণে কুরআনকে সম্মানি (কারীম) হওয়ার গুণেগুণান্বিত করা হয়েছে। তার মধ্যে থেকে কয়েকটি হলো: 1- যার বাণী তার, মহত্ব, বড়ত্ব ও সম্মান। 2- তাতে রয়েছে মানুষকে সম্মান দেয়া এবং সমস্ত উম্মতের ওপর তাদের প্রাধান্য দেয়া। 3- এটি এমন একটি কিতাব যাতে অধিক কল্যাণ ও বরকত প্রদান করা হয়েছে। ফলে তার তিলাওয়াতকারীকে সাওয়াব, ইলম ও আদব প্রদান করা হয়। 4- এটি তার স্বীয় শব্দ ও অর্থে একটি পবিত্র, মহান ও সম্মানি কিতাব।

ভাষান্তরিত: ইংরেজি ফরাসি স্পানিস তার্কিশ উর্দু ইন্দোনেশিয়ান বসনিয়ান রুশিয়ান পর্তুগীজ বাংলা চাইনিজ ফার্সি তাগালোগ ইন্ডিয়ান মালয়ালাম তেলেগু থাই