ই’তিকাদ হলো, যার প্রতি মানুষ বিশ্বাস স্থাপন করে এবং যাকে সে তার মাযহাব ও দীন হিসেবে গ্রহণ করে তার প্রতি এমনভাবে অকাট্য বিশ্বাস ও নিশ্চিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যে, অন্তর তাকে সত্যায়ন করে, তার প্রতি আত্মা পরিতৃপ্ত থাকে এবং তার জন্যে আত্মসমর্পণ করে। আর এই স্বীকৃতির সাথে কোনো প্রকার সন্দেহ অথবা দ্বিধার সংমিশ্রণ হয় না। এ কারণেই ঈমানকে আকীদা বলে নামকরণ করা হয়েছে। কারণ, ঈমানের ওপর মানুষ তার কালবকে এমনভাবে বেঁধে রাখে ও তার সঙ্গে তার অন্তরকে এমনভাবে সংযুক্ত রাখে যে, সেটি তার নিকট চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পরিণত হয় যা সন্দেহকে কবুল করে না। ই’তিকাদ দুই প্রকার: ১- বিশুদ্ধ ই’তিকাদ: আর তা হলো, আল্লাহ তাআলার রুবুবিয়্যাত, উলুহিয়্যাত, একত্ববাদ এবং তার সকল নাম ও সিফাতের ক্ষেত্রে তাঁর একক হওয়ার প্রতি ঈমান আনা। আরও ঈমান আনা তার মালায়েকাগণ (ফিরিশতা), কিতাবসমূহ, রাসূলগণ, আখিরাত দিবস ও ভালো-মন্দ তাকদীরের প্রতি এবং যাবতীয় গাইবি বিষয়, দীনের মৌলিক বিষয এবং যার ওপর সালাফে সালেহীণগণ একমত হয়েছেন তার প্রতি। ২- বাতিল ই’তিকাদ: আর তা হলো, সব বিকৃত দীনের আকীদাহ। যেমন, খৃষ্টানদের আকীদা হলো আল্লাহ তিনের তৃতীয় বা ত্রিত্ববাদ। ইয়াহুদীদের আকীদাহ হলো, উযাইর আল্লাহর পুত্র। অনুরূপভাবে বিভিন্ন গোমরাহ ফিরকার আকীদা যেমন, খারেজী, আশায়েরাহ, সূফিয়্যাহ ও অন্যান্যরা।
আনুগত্যতা হলো দীনের ভিত্তি এবং ইবাদাতের রুকন। আর তা হলো বাস্তবায়ন করার নিয়তে মানুষকে যা আদেশ করা হয়েছে তা পালন করা এবং যা থেকে তাকে না করা হয়েছে তা ছেড়ে দেয়া। আদিষ্ট বা নিষেধকৃত বিষয়টি কথা বা আমল বা বিশ্বাস যাই হোক। এটি দুই প্রকার: এক- স্রষ্টার আনুগত্য করা, আর সেটি হলো আল্লাহ ও তার রাসূল যা আদেশ করেছেন তা পালন করা এবং তারা যা নিষেধ করেছেন তা ছেড়ে দেয়া। দুই- মাখলুকের আনুগত্য করা। এটি আবার দুই প্রকার: 1- প্রসংশিত আনুগত্য। যেমন, পাপের বাইরে দায়িত্বশীল ও মাতাপিতার আনুগত্য করা। 2- মন্দ ও নিন্দনীয় আনুগত্য করা। আর তা হলো পাপ কাজে মাখলুকের আনুগত্য করা। এ ধরণের আনুগত্যের মধ্যে কতক আছে শির্ক। যেমন, হারামকে হালাল করা বা হালালকে হারাম করার ব্যাপারে বা মুর্তি পুজা বিষয়ে মাখলুকের আনুগত্য করা। আবার কোনো কোনো আনুগত্য ফাসেকী। যেমন, মদ পানে কোনো মাখলুকের আনুগত্য করা ইত্যাদি।