শির্ক - شِرْكٌ

শির্ক হলো, আল্লাহর বৈশিষ্ট্যসমূহের মধ্যে তিনি ছাড়া তার কোনো মাখলুককে আল্লাহর সমকক্ষ মনে করা। যেমন, ইবাদতে, আল্লাহর নাম ও সিফাতসমূহে অংশীদার করা। শির্ক দুই প্রকার: প্রথম: এমন শির্ক যা আল্লাহর সত্ত্বা, নাম, সিফাত ও কর্মসমূহের সাথে সম্পৃক্ত। এটি হলো রুবুবিয়্যাহর ভেতর শির্ক। দ্বিতীয়: আল্লাহর ইবাদত ও মুআমালায় শির্ক করা। এটি হলো, উলুহিয়্যাহ ও ইবাদতের ভেতর শির্ক।

ভাষান্তরিত: ইংরেজি ফরাসি স্পানিস তার্কিশ উর্দু ইন্দোনেশিয়ান বসনিয়ান রুশিয়ান পর্তুগীজ বাংলা চাইনিজ ফার্সি তাগালোগ ইন্ডিয়ান মালয়ালাম তেলেগু থাই

যাদু - سحر

যাদু হলো, তাবিজ ও মন্ত্র ও ঘিরা যা মানব দেহে ও আত্মায় প্রভাব ফেলে। ফলে সে অসুস্থ করে, হত্যা করে এবং স্বামী ও স্ত্রীর মাঝে বিচ্ছেদ ঘটায় আল্লাহর অনুমতিতে। এটি হারাম কবীরাহ গুনাহ। কখনো কখনো এটি কুফর পর্যন্ত পৌঁছে যায়। যাদু কয়েক ধরনের হতে পারে। যেমন ফিরানো ও মোড় ঘোরানো। আরও যেমন খেয়াল ও ধোকা ইত্যাদি। যাদুর প্রকৃতি হলো: প্রভাব বিস্তারে শয়তানকে ব্যবহার করা ও তার থেকে সাহায্য নেয়া। যাদুকরের জন্য তার যাদুর প্রয়োগ ততক্ষণ পর্যন্ত সম্ভব না যতক্ষণ না সে কিছু ইবাদত দ্বারা সে শয়তানের নৈকট্য লাভ না করে। কতক যাদু আছে ধারণা আবার কতক যাদু আছে বাস্তব। আর যে ব্যক্তি এ ধারণা করে যে, যাদু কেবলই ধারণ তার কোন বাস্তবতা নাই সে ভুল করল। আর যাদু উপকার বা ক্ষতি করাতে তার নিজস্ব কোন ক্ষমতা নাই। তার প্রভাব আল্লাহর কাওনী ও কদরী অনুমতিতেই হয়ে থাকে। আল্লাহ তা‘আলাই সবকিছুর স্রষ্টা।

ভাষান্তরিত: ইংরেজি ফরাসি স্পানিস তার্কিশ উর্দু ইন্দোনেশিয়ান বসনিয়ান রুশিয়ান পর্তুগীজ বাংলা চাইনিজ ফার্সি তাগালোগ ইন্ডিয়ান মালয়ালাম তেলেগু থাই

ছোট শির্ক - شرك أصغر

ছোট শির্ক হলো সে সব গুনাহ যেগুলো শরীআত প্রণেতা শির্ক বলে নামকরণ করেছেন, তবে তার সাথে গাইরুল্লাহর ইবাদত- ইচ্ছা, কথা ও কর্ম করার স্তরে পৌঁছেনি। অথবা প্রত্যেক মৌখিক আমল বা কর্ম যার ওপর শরীআত শির্ক প্রয়োগ করেছেন; কিন্তু তা একজন মানুষকে ইসলাম থেকে বের করে দেয় না। যেমন, গাইরুল্লাহর নামে শপথ করা, সামান্য রিয়া ইত্যাদি। ছোট শির্ক দুই প্রকার: 1- প্রকাশ্য শির্ক: আর এটি হলো যে শির্ক মুখে ও আমলে প্রকাশ পায়। সুতরাং মৌখিক শির্ক হলো, গাইরুল্লাহর নামে সপথ করা এবং এ কথা বলা যে, আল্লাহ যা চেয়েছে এবং তুমি যা চেয়েছো। কখনো কখনো এটি বড় শির্ক পর্যন্ত পৌছে যায় কথকের নিয়ত ও ইচ্ছার কারণে। কারণ, গাইরুল্রাহর তাযীমের ইচ্ছা করা আল্লাহকে তাযীম করার মতো। ফলে সে শির্কে আকবার করল। আর কাজের শির্ক হলো, মুসীবত দূর করা বা তা তুলে দেয়ার জন্য তাবীয পরিধান করা তাগা লাগানো এবং বদ নজর থেকে বাঁচার জন্য তাবীয ঝুলানো। তবে যদি কেউ এ বিশ্বাস করে যে, এগুলো নিজেই মুসীবত দূর করতে সক্ষম তাহলে এটি শির্কে আকবর। 2- গোপন শির্ক। এটি হলো নিয়ত, ইচ্ছা ও উদ্দেশ্যে শির্ক। যেমন, লোকিকতা ও সুখ্যাতি। যেমন, যেসব আমল দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা হয় এমন আমল যেমন সালাত বা তিলাওয়াত খুব সুন্দর করে করল, যাতে সে প্রসংশিত হয় এবং তাকে মানুষ ভালো আখ্যায়িত করে।

ভাষান্তরিত: ইংরেজি ফরাসি স্পানিস তার্কিশ উর্দু ইন্দোনেশিয়ান রুশিয়ান পর্তুগীজ বাংলা চাইনিজ ফার্সি তাগালোগ ইন্ডিয়ান মালয়ালাম তেলেগু থাই

রিয়া - رياء

রিয়া হলো, ভালো কাজ অন্যকে দেখানো বা মানুষকে দেখানোর উদ্দেশ্যে ইবাদতকে প্রকাশ করা যাতে তারা তার প্রসংশা করে। অথবা বলা যায়, কোনো আমলে গাইরুল্লাহর প্রতি লক্ষ্য রেখে ইখলাস ছেড়ে দেয়া। কতক আহলে ইলম এ বলে ব্যাখ্যা করেছেন যে, রিয়া এমন কর্ম খালেক থেকে অমনোযোগী ও অন্ধ হয়ে যার দ্বারা উদ্দেশ্য হয়ে থাকে মাখলুকে দেখানো। এটি গোপন শির্ক এবং তার সাথে সম্পৃক্ত আমলকে ধ্বংসকারী। এ বিষয়ে কঠোর হুমকি এসেছে। একজন মুসলিমের জন্য উচিত হলো যাবতীয় আমল কেবল আল্লাহর জন্য করতে সচেষ্ট হবে।

ভাষান্তরিত: ইংরেজি ফরাসি স্পানিস তার্কিশ উর্দু ইন্দোনেশিয়ান বসনিয়ান রুশিয়ান পর্তুগীজ বাংলা চাইনিজ ফার্সি তাগালোগ ইন্ডিয়ান মালয়ালাম তেলেগু থাই

মুহাব্বাতে শির্ক। - الشِّرْكُ في المَحَبَّةِ

মুহাব্বাতের শির্ক: আর তা হলো আল্লাহর সাথে গাইরুল্লাহকে আল্লাহর মুহাব্বাতের মতো বা তার চেয়েও অধিক মুহাব্বাত করা। আর তা হলো উবুদিয়্যাতের মুহাব্বাত যা একজনকে বিনয়, তাজীম, পরিপূর্ণ আনুগত্য করা এবং মাহবুবকে অন্যের ওপর প্রাধান্য দেয়াকে বাধ্য করে। এ মুহাব্বাত কেবল আল্লাহর জন্য খাস। এর মধ্যে অন্য কাউকে শরীক করা বৈধ নয়। আর যে ব্যক্তি কোনো কিছুকে আল্লাহর সাথে মুহাব্বাত করল আল্লাহর জন্য বা আল্লাহতে করল না তবে সে আল্লাহকে বাদ দিয়ে শরীক সাব্যস্ত করল। আল্লাহ তাআলা বলেন, কতক মানুষ যারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে একাধিক শরিক সাব্যস্ত করে তারা আল্লাহকে মুহাব্বাত করার মতো তাদেরকে মহব্বাত করেন। মুহাব্বাত মুলত তিন ভাগে বিভক্ত: 1- ওয়াজিব মুহব্বাত: আর তা হলো আল্লাহর মুহাব্বাত ও তার রাসূলের মুহাব্বাত এবং আল্লাহ যে সব ইবাদাত ইত্যাদিকে মুহাব্বাত করেন তার মুহাব্বাত। 2- স্বভাবগত মুহাব্বাত। এটি আবার তিন প্রকার: ক-রহমত ও দয়ার মুহাব্বাত। যেমন, পিতার মুহাব্বত সন্তানের প্রতি। খ-সত্বাগত মুহাব্বাত। যেমন স্ত্রীর প্রতি স্বামীর মুহাব্বাত। গ- উঠা বসা ও মেলা মেশার মুহাব্বাত। যেমন, মুশরিকদেরকে কোনো পেশায় বা একসঙ্গে চলাফেরা করার কারণে বা অন্য কারণে মুহাব্বাত করা। এ তিন প্রকারের মুহাব্বাত এমন মুহাব্বাত যা মাখলুকের জন্য পরস্পরের প্রতি গ্রহণযোগ্য। এ ধরনের মুহাব্বাত তাদের মধ্যে পাওয়া যাওয়া আল্লাহর মুহাব্বাতে শির্ক বলে পরিগণিত হবে না। তবে যদি এ মুহাব্বাতে সীম লঙ্ঘন হয় এবং আল্লাহর মুহাব্বাতে প্রাধান্য পায় বা তা আল্লাহর আনুগত্য থেকে ফিরিয়ে রাখার কারণ হয়। কারণ, সেটি তখন হবে নিষিদ্ধ মুহাব্বাত। 3- নিষিদ্ধ মুহাব্বাত। আর তা হলো এমন মুহাব্বাত যা শরয়ীভাবে তার জন্যে বৈধ নয়। যেমন, অপরিচিত নারী ও পুরুষদের মুহাব্বাত করা এবং বাদ্যযন্ত্র ও নেশা ইত্যাদিকে মুহাব্বাত করা।

ভাষান্তরিত: ইংরেজি ফরাসি তার্কিশ উর্দু ইন্দোনেশিয়ান রুশিয়ান পর্তুগীজ বাংলা চাইনিজ ফার্সি তাগালোগ ইন্ডিয়ান মালয়ালাম তেলেগু থাই

আনুগত্যে শির্ক করা - الشِّرْكُ في الطَّاعَةِ

আনুগত্যে শির্ক করা: আল্লাহ যা হারাম করেছেন তা হালাল করার ব্যাপারে এবং আল্লাহর যা হালাল করেছেন তা হারাম করার ব্যাপারে পাদ্রী, পীর বা আলেম ও নেতাদের আনুগত্য করা। আর তার ধরণ হলো, কোন মাখলুককে এমনভাবে গ্রহণ করা যেন সে তার আদেশ ও নিষেধে আনুগত্যের অধিকারী রব। সুতরাং আল্লাহ যা হারাম করেছেন তা হালাল করা বিষয়ে বা আল্লাহ যা হালাল করেছেন তা হারাম করা বিষয়ে যে ব্যক্তি কোন মাখলুকের আনুগত্য করল যেমন তাদের হালাল ও হারাম করার সুযোগ করে দিল এবং দীনের পরিপন্থী হওয়া সত্বেও জেনে শুনে নিজের জন্য ও অন্যদের জন্য তার আনুগত্য করা পথকে সুগন করল সে আল্লাহকে বাদ দিয়ে একাধিক রব গ্রহণ করল। আর আল্লাহর সাথে বড় শিরক করল। শরীআতের বিকৃতি ও আল্লাহর আহকামের পরিবর্তন করা বিষয়ে তাদের আনুগত্য করাকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহকে বাদ দিয়ে রুহবান ও আহবারদের রব হিসেবে গ্রহণ করা দ্বারা ব্যাখ্যা করেছেন। ফলে তারা তাদের নিজেদেরকে শরীআত প্রণয়নের ক্ষেত্রে আল্লাহর অংশিদার সাব্যস্থ করে। সুতরাং এ বিষয়ে যারা তাদের আনুগত্য করবে তারা শরীআত প্রণয়নে, হারাম ও হালাল নির্ধারণে তাদেরকে আল্লাহর সাথে শরীক সাব্যস্ত করলো। এটি বড় শির্ক। এ ধরনের আরও শির্ক হলো, শরীআতের পরিপন্থী আইন প্রণয়নে—হারামকে হালাল করার ক্ষেত্রে শাসক ও নেতাদের আনুগত্য করা। যেমন, সুদ., যিনা, মদপান, উত্তরাধিকারী সম্পদে নারী ও পুরুষদের সমান করা বা হালালকে হারাম করা যেমন, একাধিক বিবাহকে নিষিদ্ধ করা ইত্যাদি আরও যে সব বানানো কানুন দ্বারা আল্লাহর বিধানকে পরিবর্তন করে।

ভাষান্তরিত: ইংরেজি ফরাসি তার্কিশ উর্দু ইন্দোনেশিয়ান রুশিয়ান পর্তুগীজ বাংলা চাইনিজ ফার্সি তাগালোগ ইন্ডিয়ান মালয়ালাম তেলেগু থাই