শির্ক - شِرْكٌ

শির্ক হলো, আল্লাহর বৈশিষ্ট্যসমূহের মধ্যে তিনি ছাড়া তার কোনো মাখলুককে আল্লাহর সমকক্ষ মনে করা। যেমন, ইবাদতে, আল্লাহর নাম ও সিফাতসমূহে অংশীদার করা। শির্ক দুই প্রকার: প্রথম: এমন শির্ক যা আল্লাহর সত্ত্বা, নাম, সিফাত ও কর্মসমূহের সাথে সম্পৃক্ত। এটি হলো রুবুবিয়্যাহর ভেতর শির্ক। দ্বিতীয়: আল্লাহর ইবাদত ও মুআমালায় শির্ক করা। এটি হলো, উলুহিয়্যাহ ও ইবাদতের ভেতর শির্ক।

ভাষান্তরিত: ইংরেজি ফরাসি স্পানিস তার্কিশ উর্দু ইন্দোনেশিয়ান বসনিয়ান রুশিয়ান পর্তুগীজ বাংলা চাইনিজ ফার্সি তাগালোগ ইন্ডিয়ান মালয়ালাম তেলেগু থাই

কাফির বলা - تَكْفِيرٌ

তাকফীর হলো, কোনো মুসলিমকে কুফরের দোষে দোষী করা এবং তার দীন থেকে বের হয়ে যাওয়া। এটি বলা হয় যখন কোন ব্যক্তি ইসলাম ভঙ্গকারী কোন একটিতে লিপ্ত হয়। তাকফীর এটি একটি শরয়ী বিধান যা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দিকে প্রত্যাবর্তন করে। যেমন, হালাল করা, হারাম করা, ওয়াজিব করা। যত প্রকার কথা বা কর্মকে কুফর বলে আখ্যায়িত করা হয় তা সবই বড় কুফর নয়। আর যতজন কুফরে পতিত হয়, তাদের সকলের উপর কুফরের হুকুম বর্তায় না। তবে যদি তার মধ্যে কুফুরের কারণ, শর্তসমূহ পাওয়া যায় এবং তাকে কাফির বলতে কোনো বাঁধা-নিষেধ না থাকে তখন সে কাফির।সুতরাং এখানে কর্মের উপর কুফরের হুকুম দেয়া ও আমলকারীর ওপর কুফরের হুকুম দেয়ার মধ্যে প্রার্থক্য আছে। কোন ব্যক্তিকে কুফরের দোষে দোষারোপ করার অর্থ হলো, তার মধ্যে কাফেরের অন্তরের আবরণ রয়েছে। কারো ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া ছাড়া কুফরের হুকুম দেয়াতে মারাত্মক ক্ষতি ও মহা হুমকি রয়েছে।

ভাষান্তরিত: ইংরেজি ফরাসি স্পানিস তার্কিশ উর্দু ইন্দোনেশিয়ান রুশিয়ান পর্তুগীজ বাংলা চাইনিজ ফার্সি তাগালোগ ইন্ডিয়ান মালয়ালাম তেলেগু থাই

কুফর - كُفْرٌ

কুফর হয়ত শুরু থেকে থাকবে, যেমন ইতোপূর্বে যে ইসলাম গ্রহণ করেনি তার কুফর অথবা কুফর পরবর্তীতে আসবে, যেমন যে আগে ইসলাম গ্রহণ করেছে তার কুফর। আর উভয়টি দুই ভাগে বিভক্ত হয়। প্রথম: বড় কুফর। আর তা হলো এমনসব কথা বা কর্ম বা বিশ্বাস যা একজন মানুষকে ইসলাম থেকে বের করে দেয়। এটি কখনো অন্তর দ্বারা মিথ্যারোপ করার ফলে হয়, অথবা অন্তরের আমল হয়, যেমন আল্লাহ তাআলা বা তার আয়াত বা তার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করা। আবার কখনো তা প্রকাশ্য কথা দ্বারা হয়, যেমন আল্লাহকে গাল দেয়া। আবার কখনো প্রকাশ্য আমল দ্বারা হয়, যেমন মুর্তিকে সেজদা করা, গাইরুল্লাহর জন্য যবেহ করা। আর বড় কুফর বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়, তন্মধ্যে কতক: 1- অস্বীকার ও মিথ্যারোপ করার কুফরী: এ প্রকারের কুফরী কখনো অন্তরের মিথ্যারোপ দ্বারা হয়, আর কখনো মুখ অথবা অঙ্গ প্রত্যঙ্গ দ্বারা মিথ্যারোপ করার ফলে হয়। আর এটি হয় অন্তরে জানা ও ইলম থাকা সত্বেও হককে গোপন করা ও প্রকাশ্যে তার আনুগত্য না করার দ্বারা। যেমন, ইয়াহুদীদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অস্বীকার করা। 2- অহংকারের কুফর: অর্থাৎ সত্যকে না শিখে ও তার ওপর আমল না করে ছেড়ে দেওয়া। চাই তা কথার মাধ্যমে হোক বা আমল করার মাধ্যমে হোক বা বিশ্বাসের মাধ্যমে হোক। যেমন, ইবলিশের কুফর। 3- নিফাকের কুফর: আর তা হলো, অন্তরে বিশ্বাস ও আমল না করে প্রকাশ্যে অনুগত করা। 4-সন্দেহ ও সংশয়ের কুফর: আর তা হলো, হকের অনুসরণে দ্বিধা-সংশয়ে থাকা বা তা হক হওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হীনতায় থাকা। কারণ, ঈমানের দাবি হচ্ছে, দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করা যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা নিয়ে এসেছেন, তাতে কোন সন্দেহ নেই। দ্বিতীয়: ছোট কুফর, আর তা হলো এমন গুনাহ ও অপরাধ যাকে শরীআত কুফর বলে নাম করণ করেছেন। তা কোন ব্যক্তিকে ইসলাম থেকে বের করবে না এবং সে বড় কুফর পর্যন্ত পৌঁছবে না। নেয়ামতের অস্বীকার করাও এ কুফরের অর্ন্তভুক্ত। একে কুফরের থেকে ছোট কুফর বলে। যেমন, একজন মুসলিমের তার অপর মুসলিমের সঙ্গে যুদ্ধ করা। গাইরুল্লাহর নামে শপথ করা এবং মৃত ব্যক্তির জন্য কান্নাকাটি করা।

ভাষান্তরিত: ইংরেজি ফরাসি তার্কিশ উর্দু ইন্দোনেশিয়ান রুশিয়ান পর্তুগীজ বাংলা চাইনিজ ফার্সি তাগালোগ ইন্ডিয়ান মালয়ালাম তেলেগু থাই

যাদু - سحر

যাদু হলো, তাবিজ ও মন্ত্র ও ঘিরা যা মানব দেহে ও আত্মায় প্রভাব ফেলে। ফলে সে অসুস্থ করে, হত্যা করে এবং স্বামী ও স্ত্রীর মাঝে বিচ্ছেদ ঘটায় আল্লাহর অনুমতিতে। এটি হারাম কবীরাহ গুনাহ। কখনো কখনো এটি কুফর পর্যন্ত পৌঁছে যায়। যাদু কয়েক ধরনের হতে পারে। যেমন ফিরানো ও মোড় ঘোরানো। আরও যেমন খেয়াল ও ধোকা ইত্যাদি। যাদুর প্রকৃতি হলো: প্রভাব বিস্তারে শয়তানকে ব্যবহার করা ও তার থেকে সাহায্য নেয়া। যাদুকরের জন্য তার যাদুর প্রয়োগ ততক্ষণ পর্যন্ত সম্ভব না যতক্ষণ না সে কিছু ইবাদত দ্বারা সে শয়তানের নৈকট্য লাভ না করে। কতক যাদু আছে ধারণা আবার কতক যাদু আছে বাস্তব। আর যে ব্যক্তি এ ধারণা করে যে, যাদু কেবলই ধারণ তার কোন বাস্তবতা নাই সে ভুল করল। আর যাদু উপকার বা ক্ষতি করাতে তার নিজস্ব কোন ক্ষমতা নাই। তার প্রভাব আল্লাহর কাওনী ও কদরী অনুমতিতেই হয়ে থাকে। আল্লাহ তা‘আলাই সবকিছুর স্রষ্টা।

ভাষান্তরিত: ইংরেজি ফরাসি স্পানিস তার্কিশ উর্দু ইন্দোনেশিয়ান বসনিয়ান রুশিয়ান পর্তুগীজ বাংলা চাইনিজ ফার্সি তাগালোগ ইন্ডিয়ান মালয়ালাম তেলেগু থাই

আউলিয়া (ওলীগণ)। - أولياء

আউলিয়া: শব্দটি ওলী শব্দের বহুবচন। শরীআতের পরিভাষায় যার মধ্যে দুটি গুণ একত্র হয় তাকে ওলী বলে। আর তা হলো ঈমান ও তাকওয়া, যা ফরযসমূহ ও নফলসমূহ আদায় করার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভকে অর্ন্তভুক্ত করে। সাথে সে আল্লাহর আদেশের ইলম রাখে এবং যা জানে তদুনুযায়ী আমল করে। যার আকীদা পরিস্কার এবং আমল সহীহ সে আল্লাহর ওলী। একজন মানুষের ঈমান ও তাকওয়া অনুযায়ী তার বন্ধুত্ব আল্লাহর জন্য হয়ে থাকে। যেমন ওলী হলো সে আল্লাহ যার যাবতীয় বিষয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করল ও তার সংশোধনের জন্য তার প্রতি বিশেষ যত্ন নিল। কারণ, আল্লাহ সালেহীনদের দায়িত্ব গ্রহণ করে থাকেন। তিনি মুমিনদের মহাব্বাত করেন ও তাদের থেকে প্রতিহত করেন। আল্লাহর ওলীগণ দুই প্রকার: 1- অগ্রগামী নৈকট্যলাভকারী। 2- মধ্যপন্থাবলম্বনকারী ডানপন্থী। নৈকট্য লাভকারী অগ্রগামীগণ হলো, যারা ফরযের পর নফলসমূহ দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করেন। তারা ওয়াজিব, মুস্তাহাব সবই করেন এবং হারাম ও মাকরূহ থেকে বিরত থাকে। আর ডান পন্থী হলো, সেসব নেককার বান্দা যারা ফরয দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করেন। তারা আল্লাহ তাদের ওপর যা ওয়াজিব করেছেন তার ওপর আমল করেন এবং আল্লাহ যা নিষেধ করেছেন তা ছেড়ে দেন। তারা মানদুব বিষয়গুলোর ওপর আমল এবং বৈধ অনর্থক বিষয়গুলো ছেড়ে দিতে নিজেদের কষ্টের মধ্যে ফেলেন না। বান্দার ঈমান ও তাকওয়া অনুযায়ী বন্ধুত্ব ব্যবধান হয়ে থাকে। ফলে প্রত্যেক মুমিনেরই আল্লাহর মুহাব্বত, বন্ধুত্ব ও নৈকট্যের অংশ রয়েছে। কিন্তু এ অংশটুকু দৈহিক ও অন্তরের নেক আমল যার দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা হয় তা অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন হয়। কারণ, যে নিজের ওপর যুলুম করে সে হলো গুনাহগার মুমিন। তার ঈমান ও আমলে সালেহ অনুযায়ী তার রয়েছে আল্লাহর বন্ধুত্ব। আল্লাহর অলীগণ নিষ্পাপ নন এবং তারা গায়েব জানেন না। সৃষ্টি ও রিযিক দানে তাদের কোনো ক্ষমতা নাই। তারা কখনোই মানুষকে তাদের সম্মান করা বা কোনো ধন সম্পদ তাদের জন্য খরচ করার প্রতি আহ্বান করে না। আর যে ব্যক্তি এ সব করে সে আল্লাহর ওলী নন। বরং সে মিথ্যুক, মিথ্যা রচনাকারী এবং শয়তানের বন্ধু। আর বেলায়েত অধ্যায়ে এটি ভুল বুঝ ও প্রচারিত গলদ। আরও কতিপয় ভুল হলো: 1- এ ছাড়াও আরও ভুল হলো, আল্লাহর বন্ধু নবী ও নেককারদের বিষয়ে বাড়াবাড়ি করা, যেমন, আল্লাহর কোন বৈশিষ্ট্যকে নবীদের জন্য সাব্যস্ত করা। যেমন, নেককার লোকদের বিষয়ে বাড়াবাড়ি, তাদের কবরসমূহের ওপর নির্মান করা, তাদের নিষ্পাপ হওয়া দাবী করা ইত্যাদি। 2- অনেক মানুষের বিশ্বাস করা যে, একজন বান্দা যতক্ষণ পর্যন্ত কোন অলৌকিক কর্ম সম্পাদন না করবে ততক্ষণ সে ওলী হতে পারবে না। 3- ওলী হওয়ার দ্বারা কেউ নিষিদ্ধ কর্ম করা ও ওয়াজিবসমূহ ছেড়ে দেওয়ার মর্যদায় উপনীত হয়। এবং এ বিশ্বাস করা যে, ওলীগণ এমন এক পর্যায় পৌঁছে যায় যে পর্যায়ে পৌছলে তাদের থেকে মুকাল্লাফ হওয়ার বিষয়টি আর থাকে না। এটি হলো সু স্পষ্ট গোমরাহী। ওলী হওয়া কখনোই নিষিদ্ধ কর্ম করা এবং ওয়াজিব ছেড়ে দেয়া পর্যন্ত পৌছে দেয় না। 4- কতক মানুষ এ ধারণ পোষণ করে যে, ওলী হওয়া কেবল কতক মানুষের বৈশিষ্ট। কিন্তু বিশুদ্ধ হলো, ওলী হওয়া একটি দীনি মর্যদা। এটি প্রত্যেক মুত্তাকী মুমিনের মধ্যে পাওয়া যেতে পারে। এটি কোন ব্যক্তি, স্থান ও কালের সাথে খাস নয়। 5- ওলীদের ওপর কেউ কেউ আল্লাহর সাথী, আল্লাহর মানুষ প্রয়োগ করে। এ ধরণের নাম করণের ওপর তাদের কাছে কোন প্রমাণ নেই। সূফীগণ ওলীর ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের আকীদা পোষণ করে থাকেন। তাদের কেউ ওলীকে নবীর ওপর প্রাধান্য দেয়। আবার তাদের কেউ ওলীকে সব সিফাতে আল্লাহর বরাবর মনে করে। সে সৃষ্টি করে, রিযিক দেয়, জীবন দেয়, মৃত্যু দেয় এবং জগতকে সে পরিচালনা করে। তাদের নিকট বিলায়াতের বিভিন্ন প্রকার রয়েছে। যেমন, গাওস, আকতাব, আবদাল, নুজাবা। হিরা গুহায় তারা তাদের দপ্তরে প্রত্যেক রাত একত্র হয় এবং তারা তাকদীরের বিষয়ে দেখা শোনা করে। তাদের কেউ কেউ আছে যারা এ ধরনের বিশ্বাস করে না তবে তারা তাদের ও তাদের রবের মাঝে মাধ্যম সাব্যস্থ করে। চাই তা তাদের জীবদ্দশায় হোক বা মৃত্যুর পর হোক। আহলে সুন্নাত ওয়ালা জামাত ইসমত (নিষ্পাপ হওয়া) নবী ছাড়া আর কারো জন্য বিশ্বাস করে না। আর অপরদিকে সূফীগণ ওলী হওয়ার জন্য ইসমতকে শর্ত হিসেবে দেখেন। আবার তাদের কেউ আছে যদি কেউ পদস্খলনে পতিত হয় অথবা ভুলে পতিত হয় তখন তার থেকে বিলায়াতকে সম্পূর্ন না করে দেয়।

ভাষান্তরিত: ইংরেজি ফরাসি স্পানিস তার্কিশ উর্দু ইন্দোনেশিয়ান বসনিয়ান রুশিয়ান পর্তুগীজ বাংলা চাইনিজ ফার্সি তাগালোগ ইন্ডিয়ান মালয়ালাম তেলেগু থাই