শরীয়াতের বিধানসমূহ বর্ণনা দেয়ার ক্ষেত্রে ফতোয়া ইজতিহাদেরই একটি প্রকার। আর এটি হচ্ছে, কাউকে হুকুম মানতে বাধ্য করা ছাড়া নির্দিষ্ট মাস‘আলায় শরীয়াতের হুকুম সম্বন্ধে সংবাদ দেওয়া ও শরীয়াতের যেসব মাসআলা বুঝতে কঠিন হয় তার উত্তর প্রদান করা। ফতোয়া ইশারা, লিখা ও কর্মের মাধ্যমেও হয়। আর ইফতা আকিদাগত মাসআলা এবং লেনদেন, শাস্তি, বিয়ে-শাদীসহ শরীয়তের শাখা-প্রশাখাগত আমলী (ব্যবহারিক) সকল অধ্যায়কে শামলি করে। বিজ্ঞ আলেম ছাড়া আর কারো জন্য ফতোয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে আসা বৈধ নয়। কারণ, এটি আল্লাহ দীনের বিধান সম্পর্কে সংবাদ দেওয়া। বস্তুত এটি একটি ঝুকিপূর্ণ দায়িত্ব। আল-কুরআনুল কারীমে বিনা ইলমে এতে ঘাটাঘাটি করাকে আল্লাহর সাথে শির্ক করার সঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে।
ইজতিহাদ হলো শরয়ী প্রমাণাদি থেকে শরীআতের বিধান জানা ও তা লাভ করার পদ্ধতিসমূহের একটি পদ্ধতি। শাখাগত বিধানসমূহ হতে কোনো একটি বিধান বের করার জন্য ফকীহের যথা সাধ্য চেষ্টা করা। সুতরাং দীনের যে সব বিষয়গুলো স্পষ্ট জানা গেছে সে সব বিষয়ে কোনো ইজতিহাদ নাই। যেমন, সালাতসমূহ ফরয হওয়া ও তা পাঁচ ওয়াক্ত হওয়া। উলামাগণ শরীআতে সংঘটিত ইজতিহাদকে বৈধতার দিক বিবেচনায় দুইভাগে ভাগ করেন: এক: শরীআতের দৃষ্টিতে গ্রহণযোগ্য ইজতিহাদ । আর তা হলো সেই ইজতিহাদ যা অভিজ্ঞদের থেকে পাওয়া যায় এবং তার শর্তসমূহের বাস্তবায় ঘটে। আর তা হলো দুই প্রকার: 1- সাধারণ: আর তা হলো, বুদ্ধিমান হওয়া, প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়া, মুসলিম হওয়া ও ন্যায়পরায়ন হওয়া। 2- বিশেষ: আর তা হলো, ইজতিহাদের যাবতীয় পদ্ধতিসমূহ এবং ইস্তেমবাতের নিয়ম ও মাধ্যমসমূহকে জানা ও তার ওপর চিন্তা করার ক্ষমতা। যেমন, কুরআন সুন্নাহ, ভাষা, উসূলে ফিকাহ ইত্যাদি জানা। দুই: শরীআতের দৃষ্টিতে অগ্রহণযোগ্য ইজতিহাদ। আর তা হলো এমন সব ইজতিহাদ যাতে ইজতিহাদের উপকরণ ও পদ্ধতিসমূহকে যথাযথ পালন করা হয় না। সুতরাং যে কোনো মতামত এভাবে বের হয়ে থাকে তা অগ্রহণযোগ্য হওয়ার ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নাই। কারণ, এর বাস্তবতা হলো এটি কেবল একটি প্রবৃত্তির চাহিদা অনুযায়ী মত দেয়া ও প্রবৃত্তির অনুসরণ করা এবং দুনিয়াবি কোনো উদ্দেশ্য থাকা।