রমযান মাস: হিজরি বছরের মাসসমূহের নবম মাস যেটি শাবান মাসের পরে এবং শাউয়াল মাসের আগে। বিভিন্ন আহকাম ও ফযীলতের কারণে রমযান মাসটি অন্যান্য মাসের তুলনায় বিশেষ মর্যাদার অধিকারী। তন্মধ্যে এ মাসে কুরআন নাযিল হওয়া, তাতে সিয়াম ওয়াজিব হওয়া, এ মাসে কদরের রাত রয়েছে, তারাবীর সালাত এবং এ মাসে সাওয়াব বৃদ্ধি পাওয়া।
আশুরা: এটি মুহাররম মাসের দশম দিন। এ দিন সাওম পালনের কথা হাদীসে বর্ণিত আছে। এটি অতীতের এক বছরের গুনাহের কাফফারাহ। গুনাহ দ্বারা সাগীরাহ গুনাহ উদ্দেশ্য। যদি তার সাগীরাহ গুনাহ না থাকে তাহলে কবীরাহ গুনাহকে হালকা করা হবে। এ হালকা করাটি আল্লাহর অনুগ্রহের ওপর নির্ভর করবে। আর যদি কবীরাহ গুনাহ না থাকে তাহলে তার মর্যাদা বৃদ্ধি করা হবে। আর এ দিনটিকে কেন্দ্র করে যে সব অনুষ্ঠান, সুরমা লাগানো, খিযাব লাগানো এবং আশুরার দিনে ও রাতে পরিবারের জন্য ভালো খাবারের ব্যবস্থা করা ইত্যাদি জমহুর আহলে ইলমের মতে এটি বিদআত। কারণ, এ দিনে ফযীলত সম্পর্কে একমাত্র সাওম ছাড় আর কোনো আমল প্রমাণিত নয়।
সাওম একটি মহান ইবাদত। আর তারই অংশ হচ্ছে, রমযানের সাওম। এটি ইসলামের রুকনসমূহ হতে একটি রুকন। এটি সুবহে সাদেক উদয় হওয়া থেকে শুরু হয় আর সূর্যাস্ত যাওয়ার মাধ্যমে শেষ হয়। এটি ভাগ হয় না। যে ব্যক্তি এই দীর্ঘ সময় সাওম পালনে অক্ষম হয় কিন্তু যুহর পর্যন্ত পালনে সক্ষম হয়, তার জন্য এতটুকু সিয়াম শরীআতসম্মত নয়, সে খাবার গ্রহণ করবে। আর সাওম ভঙ্গের সর্বসম্মত কারণসমূহ হলো, খানা, পান করা ও সহবাস করা। নফল সাওম বিভিন্ন ধরনের আছে। তার মধ্যে উত্তম সাওম হলো, একদিন সিয়াম পালন করা ও একদিন খাবার গ্রহণ করা।
শরীআতের মাকাছেদ (مَقَاصِدُ الشَّرِيعَةِ): সেসব লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে বলে যেগুলো শরীআত নিয়ে এসেছে এবং (হালাল-হারাম) বিধানসমূহে তা বাস্তবায়ন করেছে। আর প্রত্যেক স্থানে ও যুগে তার বাস্তবায়ন, সুন্দরভাবে তার সংরক্ষণ ও তার হিফাযতের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। আর শরীআত যেই স্বার্থ (কল্যাণ) হিফাযত করার জন্য এসেছে তার বিবেচনায় মাকাছেদে শরীআহ (শরীআতের উদ্দেশ্যবলী) তিন ভাগে ভাগ হয়: 1- জরুরি মাকাছেদ (المَقَاصِدُ الضَّرُورِيَّةُ): দীন ও দুনিয়াবী কল্যাণ প্রতিষ্ঠায় যা খুবই জরুরী, যদি তা না থাকে মহা ফাসাদ দেখা দেবে। আর তা পাঁচটি মৌলিক বিষয় হিফাযত করার মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়। আর তা হলো, দীন, জ্ঞান, নাফস, বংশ ও সম্পদ। 2- প্রয়োজনীয় মাকাসেদ (المَقَاصِدُ الحَاجِيَّةُ): আর হলো যদি তা পাওয়া না যায়, তখন মানব জাতির ওপর কষ্ট ও বিপদ নেমে আসে। 3- সৌন্দর্যবর্ধক মাকাসেদ (المَقَاصِدُ التَّحْسِينِيَّةُ): আর তা হলো যা মানুষের অবস্থাকে সুন্দর করে এবং তার জীবনকে সুন্দরভাবে পূর্ণতা দান করে। এটিকে মাকাসেদে কামালিয়্যাহ, তাকমীলিয়্যাহ অথবা কামালিয়্যাত বলে নাম করণ করা হয়।