জিন আগুনের সৃষ্টি, তারা মুকাল্লাফ অর্থাৎ শরীআতের আদেশ-নিষেধ মান্য করতে আদিষ্ট। তাদের মধ্যে কেউ আছে মুমিন আবার কেউ কাফির। শয়তান তাদের থেকেই কাফের জিনের নাম। এটি (شَطن) থেকে নির্গত হওয়া বিশুদ্ধ, যার অর্থ হলো দূরীভুত হওয়া। কারণ, তার কুফর ও অবাধ্যতার কারণে সে হক থেকে দূরে সরে গেছে। আবার (شاطَ ) অর্থাৎ ধ্বংস হওয়া ও পুড়ে যাওয়া থেকে নির্গত হওয়াও বিশুদ্ধ। কারণ, শয়তান আগুনের তৈরি।
অযু হলো, নির্দিষ্ট অঙ্গে পবিত্র পানি ব্যবহার করা। আর সেটি হলো, নিজে পবিত্র এবং অন্যকেও পবিত্রকারী। আর নির্দিষ্ট অঙ্গ হলো, চেহারা, দুই হাত, দুই পা ও মাথা। এ অঙ্গগুলো নির্ধারিত নিয়মে ধৌত করতে হবে। আর তা হলো,আল্লাহর জন্য ইবাদত করার নিয়তে চেহারা, হাত ও পা ধোয়া এবং মাথা মাসেহ করা। চাই তা নাপাকী দূর করার জন্য হোক বা নতুন করে পবিত্রতা অর্জনের জন্য হোক প্রভৃতি। অযু করার পরিপূর্ণ নিয়ম হলো, বিসমিল্লাহ দিয়ে শুরু করবে এবং বলবে বিসমিল্লাহ। দুই হাতের কব্জি পর্যন্ত ধৌত করবে। কারণ, এ দুটি দ্বারা সে অন্যান্য অঙ্গ স্পর্শ করবে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন উযু শুরু করতেন তখন তিনি দুই হাতের তালুতে পানি ঢালতেন এবং পাত্রে হাত প্রবেশ করানোর আগে এ দু হাত ধৌত করতেন। ঘুম থেকে উঠার পর এ দুটি ধোয়ার গুরুত্ব বেশি। তারপর কুলি করবে, নাকে পানি নিবে ও নাক থেকে পানি ঝেড়ে ফেলবে। কুলি হলো, মুখে পানি প্রবেশ করিয়ে নাড়া চাড়া করে তা ফেলে দেওয়া। আর ইস্তেনশাক (الاستنشاقُ) হলো, নাকে পানি প্রবেশ করানো। আর ইস্তেনসার (الاستنثارُ) হলো, নাক থেকে পানি বের করা। তারপর চেহারা এবং দুই হাত আঙ্গুলের মাথা থেকে কনুই পর্যন্ত ধোয়া। দুই কনুই ধোয়ার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করবে। ডান হাত দিয়ে ধোয়া শুরু করবে এবং আঙ্গুলগুলো খিলাল করবে। তারপর দুই হাতে কব্জি ভিজিয়ে একবার পুরো মাথা মাসেহ করবে। পুরো মাথা দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, পুরো মাথা মাসেহ করা, প্রত্যেক চুলে পানি পৌঁছানো নয়। উত্তম হলে, দুই হাতের তালুকে মাথার সামনের ভাগে রেখে পিছনের দিকে নিয়ে যাবে তারপর পুনরায় আবার সামনে ফিরিয়ে নিয়ে আসবে। এ ক্ষেত্রে নারীরাও পুরুষের মতো। তারপর দুই পা ধৌত করবে। ডান পা দিয়ে শুরু করে তা টাখনু পর্যন্ত ধৌত করবে। তারপর একই নিয়মে বাম পা ধৌত করবে। দুই পায়ের আঙ্গুল নিজ হাতে খিলাল করবে। মাথা মাসেহ করা ছাড়া বাকী সব কর্মগুলো একবার বা দুইবার বা তিনবার ধৌত করবে। তবে মাথা মাসেহ একবার করবে।