মানুষের নফস যা ভালোবাসে এবং যা কিছু তার স্বভাবের সাথে মিলে বা উপযোগী হয় তার প্রতি ঝুঁকে যাওয়া। যদি তার নফস এমন কিছুর দিকে ঝুকে যা শরীআত পরিপন্থী তাহলে তা হবে প্রবৃত্তির নিন্দনীয় অনুসরণ। আর যদি তার নফস এমন কিছুর দিকে ঝুঁকে যা শরীআতের বিধান অনুযায়ী হয় তাহলে তা হবে প্রবৃত্তির প্রসংশনীয় অনুসরণ। প্রবৃত্তি দুই ভাগে বিভক্ত হয়: 1- প্রবৃত্তি যা দীনের যাবতীয় বিধানসমূহে হয়ে থাকে। এটিকে সংশয়ের প্রবৃত্তি বলে। এটি প্রবৃত্তির সবচেয়ে ক্ষতিকর প্রকার। এ ধরনের প্রবৃত্তির অনুসরণ একজন ব্যক্তিকে বিদআত বা কুফরে পতিত করে। এ কারণেই বিদআতীদের প্রবৃত্তির পুজারী বলা হয়। কারণ, তারা তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করল এবং কুরআন ও সুন্নাহ হতে বিমুখ হল। 2- প্রবৃত্তি যা দুনিয়াবী বিষয়ে হয়ে থাকে। এটিকে রিপুর প্রবৃত্তি বলা হয়ে থাকে। যেমন, খাওয়া, বিবাহ করা। এ ধরণে প্রবৃত্তি একজন মানুষকে কখনো গুনাহ ও অশ্লীল কাজে নিয়োজিত করে। দীনি বিষয়ে প্রবৃত্তির অনুসরণ করা রিপুর বিষয়ে প্রবৃত্তির অনুসরণ অপেক্ষা অধিক মারাত্মক। আর মনে রাখতে হবে শরীআত আসছে মানুষকে প্রবৃত্তির অনুসরণ থেকে বের করে শরীআতের অনুসরণের দিকে নিয়ে যেতে।
মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া: ইচ্ছা করে মিথ্যা সংবাদ দেওয়া যাতে বাতিল উদ্দেশ্য হাসিল করা যায়। চাই তা শপথ সহকারে হোক বা শপথবিহীন। যেমন কোন আত্মাকে ধ্বংস করা বা সম্পদ লুন্ঠন করা বা হারামকে হালাল করা বা হালালকে হারাম করা ইত্যাদির জন্যে সাক্ষী দেয়া। মিথ্য সাক্ষ্য দানকারী চারটি বড় গুনাহে লিপ্ত হলো। প্রথমত: সে তার আত্মার ওপর মিথ্যা, অপবাদ এবং কবীরাগুনাহ হতে কোন একটি কবীরাহ গুনাহে লিপ্ত হয়ে জুলুম করল। দ্বিতীয়ত: সে যার বিপক্ষে সাক্ষ্য প্রদান করল এবং যার সম্পদ, ইজ্জত ও জানকে সাক্ষ্য দ্বারা ছিনিয়ে নিল তার ওপর জুলুম করল। তৃতীয়ত: আর সে জুলুম করল তার ওপর যার জন্য সে সাক্ষ্য দিল। যেমন সে তার কাছে হারাম মালকে নিয়ে গেল। চতুর্থত: আল্লাহ যা হারাম করেছেন সে তা নিজের কর্ম দ্বারা বৈধ করল।
প্রবৃত্তির অনুসরণ করা খারাপ ও গোমরাহীর মূল কারণ গুলোর একটি অন্যতম কারণ। আর তা হলো শরীআত বিরোধী কার্যকলাপের প্রতি মানুষের আত্মার ঝুঁকে যাওয়া। আর সেটি দুই প্রকার: 1- সংশয়যুক্ত বস্তুতে প্রবৃত্তির অনুসরণ করা। এটি হলো প্রবৃত্তির সবচেয়ে ক্ষতিকর প্রকার। প্রবৃত্তির অনুসরণ একজন মানুষকে বিদআত বা কুফরে লিপ্ত হওয়ার দিকে নিয়ে যায়। এ কারণেই বিদআতীকে প্রবৃত্তির অনুসারী বলা হয়ে থাকে। কারণ তারা তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করল এবং কিতাব ও সুন্নাহ থেকে বিমুখ রইল। 2- রিপুর ক্ষেত্রে প্রবৃত্তির অনুসরণ করা। যেমন বৈধ বস্তু অতিক্রম করে হারামে লিপ্ত হওয়া। যেমন, সুদ খাওয়া, ব্যভিচার করা। এটি একজন মানুষকে ফাসেকীর মধ্যে লিপ্ত করে। সংশয়যুক্ত বস্তুতে প্রবৃত্তির অনুসরণ করা রিপুর ক্ষেত্রে প্রবৃত্তির অনুসরণ করা অপেক্ষা অধিক মারাত্মক। আর ইসলামী শরীআতের আগমন হলো মানুষকে প্রবৃত্তির অনুসরণ থেকে বের করে শরীআতের অনুসরণের দিকে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে।