পাঁচ ওয়াক্ত সালাত: যে সব সালাত আল্লাহ তাআলা তার বান্দার ওপর দৈনিক পাঁচবার আদায় করা ফরয করেছেন। আর তা হলো, যোহর, আছর, মাগরিব, এশা ও ফজর। এগুলো ফরয হওয়া কুরআন, সুন্নাহ ও ইজমা দ্বারা প্রমাণিত। এগুলো অবশ্যই দীনের জরুরী বিষয়। অস্বীকারকারী ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে ত্যাগকারী কাফের হয়ে যাবে। এগুলো শাহাদাতাইন তথা দুই সাক্ষ্যদানের পর সবচেয়ে গুরুত্ব্যপূর্ণ ও উত্তম ফরয এবং ইসলামের পাঁচ রুকনের দ্বিতীয় রুকন। আমাদের নবী মুহাম্মাদকে যখন মিরাজে নিয়ে যাওয়া হয় তখন প্রথমে পঞ্চাশ ওয়াক্ত সালাত আল্লাহ ফরয করেন। তারপর আমাদের নবীর সুপারিশের কারণে তা কমিয়ে পাঁচ ওয়াক্তে আনা হয়। এখন তা আমল হিসেবে পাঁচ ওয়াক্ত; কিন্তু সাওয়াব লাভে পঞ্চাশ ওয়াক্তের সমপরিমাণ।
দুটি সাক্ষ্যদানের পর সালাত হলো দীনের খুটি ও ইসলামের মহান রুকনসমূহের অন্যতম। যে ব্যক্তি তা সংরক্ষণ করল সেই সৌভাগ্যবান। আর যে ব্যক্তি তা বরবাদ করল বা তা ছেড়ে দিল সে দূর্ভাগা ও অহংকারী। আল্লাহ তা সংরক্ষণ করার প্রতি ও প্রতিষ্ঠা করার জন্য অনেক আয়াতে নির্দেশ দিয়েছেন। ইচ্ছাকৃতভাবে সালাত ত্যাগকারী আল্লাহর শাস্তি ও অসন্তুষ্টির মুখোমুখি হতে হবে। আর তাকে দুনিয়া ও আখিরাতে লাঞ্চিত হতে হবে। ইচ্ছাকৃত সালাত ত্যাগকারী দুই প্রকার। 1- সালাত ফরয হওয়াকে অস্বীকার করে সালাত ত্যাগ করা। এটি অবশ্যই কুফর। 2- সালাতকে অলসতা ও হালকাভাবে দেখে তা ত্যাগ করা যে, তার পরবর্তী সময়ের প্রবেশ করা। এটিও সুস্পষ্ট দলীল পাওয়া যাওয়ার কারণে কুফর। এই মত হলো উমার, আলী, জাবের সহ আরও অন্যান্য সাহাবী রাদিয়াল্লাহু আনহুমগণের। যেমনটি তাদের থেকে সহীহ সনদসমূহে বর্ণিত হয়েছে। একজন সাহাবীকেও পাওয়া যাবে না যে সে এ মতের বিরোধিতা করেছে। এর ওপর সাহাবীগণের ইজমার কথা একাধিক আলেম বর্ণনা করেছেন। দ্বিতীয় মত হলো এটি কবীরাহ গুনাহ ও মস্ত বড় পাপ। তার ত্যাগকারীকে হত্যা করা হবে। তবে তাকে কাফির সাব্যস্ত করা যাবেনা। এটি শাফেয়ী ও মালেকীদের মাযহা্ব। তৃতীয় মত হলো, এটি কবীরাহ গুনাহ ও মহাপাপ। তাকে আমরণ বা তাওবা করা পর্যন্ত বন্দী করে রাখা হবে। তবে তাকে কাফের সাব্যস্ত করা হবে না। এটি হানাফীদের মাযহাব। আর যে ব্যক্তি কোনো অপারগতার কারণে সালাত ছেড়ে দেয়, যেমন ঘুম, ভুলে যাওয়া ইত্যাদি সে অবশ্যই অপারগ। তাকে অবশ্যই যখন স্মরণ হয় কাযা করতে হবে।